ঈদে নৌ নিরাপত্তায় ৯ দফা সুপারিশ জাতীয় কমিটির

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  যাত্রীবাহী লঞ্চ এমএল পিনাক ৬ দুর্ঘটনার পুনঃতদন্ত ও প্রকৃত অপরাধীদের চি‎হ্নিত করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে নৌ সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি। কমিটি পবিত্র ঈদুল আজহায় নৌ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৯ দফা সুপারিশ করেছে।

আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনস্থ মুক্তি ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি ও সুপারিশ তুলে ধরা হয়। পিনাক ৬ ট্রাজেডির তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পানিসম্পদ বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক, বাপার যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, বিআইডব্লিউটিএ’র সাবেক পরিচালক এমদাদুল হক বাদশা, উন্নয়ন ধারা ট্রাস্টের সদস্যসচিব আমিনুর রসুল বাবুল, সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট তাসনিম রানা, জাতীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মুর্শিকুল ইসলাম শিমুল ও সেকেন্দার হায়াৎ, অর্থ সম্পাদক পুষ্পেন রায়, প্রচার সম্পাদক জসি সিকদার প্রমুখ।

পিনাক ৬ দুর্ঘটনার পুনঃতদন্তের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, নৌ দুর্ঘটনা তদন্তে সরকার যে ‘স্থায়ী তদন্ত কমিটি’ গঠন করেছে সেখানে নৌ প্রকৌশলী, পানিসম্পদ বিশেষজ্ঞ, পরিবেশবিদ, নৌ পরিবহনবিষয়ক গবেষক এবং নৌযান মালিক, শ্রমিক ও যাত্রী প্রতিনিধি রাখা হয়নি। এ কারণে শুরু থেকেই এই তদন্ত নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে মূল অভিযুক্তদের আড়াল করে ‘উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে’ চাপানো হয়েছে। প্রকৃত অপরাধীরা শাস্তি না পাওয়ায় পরবর্তীতে অয়েল ট্যাংকার বিস্ফোরণে সুন্দরবন ট্রাজেডিসহ গত তিন বছরে বেশ কয়েকটি আলোচিত নৌ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব কারণে বিশেষজ্ঞ মহলসহ সাধারণ মানুষ নৌ নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।

সংবাদ সম্মেলনে পিনাক ৬ দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটনে বিশেষজ্ঞসহ সংশ্লিষ্ট সকল পর্যায়ের প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি জাতীয় তদন্ত কমিটি গঠন, প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা, সকল নৌ দুর্ঘটনায় নিহতদের জনপ্রতি পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ ও পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরি প্রদান, নৌযান মালিকসহ দায়ীদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণের অর্ধেক টাকা আদায়, নৌ দুর্ঘটনায় নিখোঁজদের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও তাদের ‘মৃত’ হিসেবে গণ্য করে সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানানো হয়।

লিখিত বক্তব্যে আসন্ন ঈদুল আজহায় নৌপথে নিরাপদ যাতায়াতের জন্য ৯টি সুপারিশ উত্থাপন করা হয়। সুপারিশে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত গঠন, ২০ আগস্ট থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা, নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ডের পাশাপাশি উপকূলীয় জেলাগুলোর পুলিশ প্রশাসনকে নৌ নিরাপত্তার কাজে সম্পৃক্ত করা, ফিটনেস ও রেজিস্ট্রেশনবিহীন লঞ্চসহ সব ধরনের অবৈধ নৌযান চলাচল বন্ধে সারা বছর নৌপরিবহন অধিদপ্তর ও বিআইডব্লিউটিএ’র অভিযান পরিচালনা, অবৈধ নৌযান শনাক্ত করতে নৌপথবেষ্টিত প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবীদের সমন্বয় ‘নৌ নিরাপত্তা বিষয়ক বিশেষ টাস্কফোর্স’ গঠন এবং ঈদে ত্রুটিপূর্ণ লঞ্চ চলাচল বন্ধে ঈদ-পূর্ববর্তী ১০ দিন যাত্রীবাহী নৌযানের সার্ভে বন্ধ স্থগিত রাখার কথা বলা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর